রহমত নিউজ ডেস্ক 11 June, 2023 01:07 PM
মাসিক ভাতা ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজারে উন্নতি, ৯ মাসের বকেয়া ভাতা পরিষদ ও উন্নতিকরণ ভাতা নিয়মিত দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা। দাবি মানা না হলে ১৩ জুন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির আলটিমেটামও দিয়েছেন তারা।
রোববার (১১ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ এন্ড সার্জনস্ (বিসিপিএস) মিলনায়তনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
এসময় প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীনে মোট দুটি পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্স আছে। এর মধ্যে একটি হলো রেসিডেন্সি, যার কোর্স মেয়াদকাল ৫ বছর। আরেকটি হলো নন-রেসিডেন্সি, যার কোর্সের মেয়াদকাল ২ বছর। এসব কোর্সে যারা পড়াশোনা করেন তারা সবাই ৫ বছর এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রি কমপ্লিট করে ডাক্তার হোন। এরপর আবার ১ বছর ইন্টার্নশিপ ডিউটির পর প্রতিযোগিতামূলক কঠিন ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয় এসব কোর্সে চান্স পাওয়ার জন্য। দেখা যায় একেক জন ডাক্তারকে এসব পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে চান্স পাওয়ার জন্য ২ থেকে কোন ক্ষেত্রে ৫ বছর পর্যন্তও অপেক্ষা করতে হয়।
তারা বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হওয়ার জন্য এসব পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে আমরা পড়াশোনা করতে আসি। কিন্তু এখানে শুধু পড়াশোনাই নয়, পাশাপাশি আমাদের সকাল থেকে সন্ধ্যা ডিউটি, ক্লাস ও গবেষণার কাজ করতে হয়। এমনকি ইভিনিং-নাইট ডিউটিও করতে হয়। ২০১৯-২০ সেশন থেকে নন-রেসিডেন্সি কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা সেই ভাতা নিয়মিত পেলেও এর পরের বছর থেকেই তা অনিয়মিত হয়ে যায়। ২২-২৩ সেশনের নন-রেসিডেন্ট ডাক্তাররা ১২ মাসের মধ্যে মাত্র ৩ মাসের ভাতা পেয়েছেন, বাকি ৯ মাসই বকেয়া। কোর্সে থাকাকালীন অন্য কোনো চাকরি, ডিউটি, চেম্বার ইত্যাদি করার অনুমতি না থাকায় এই কোর্সের ডাক্তার রা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। একেবারেই শূন্য হাতে ধার-দেনা করে দিনযাপন করতে হচ্ছে মেধাবী এই ডাক্তারদের।
মেডিকেলে উচ্চতর কোর্সে অধ্যয়নরত চিকিৎসকদের সংগঠন প্রাইভেট পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মো. হাবিবুর রহমান সোহাগ বলেন, বর্তমানে ২১-২২ সেশনের মোট ৭৫০ জন এবং ২২-২৩ সেশনের ৭৫০ জনসহ সর্বমোট ১৫০০ জন প্রাইভেট ডাক্তার এই কোর্সে আছেন। কিন্তু প্রতিবারই ভাতা আদায়ের জন্য আমাদের ধরনা দিতে হচ্ছে কখনো বিএসএমএমইউতে, আবার কখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বা অর্থ মন্ত্রণালয়ে। যেখানেই যাই তারা একজন আরেকজনের কাছে যেতে বলেন, ডিশোল্ডারিং করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমরা বিএসএমএমইউয়ের শিক্ষার্থী। ভিসি স্যার আমাদের অভিভাবক। নিয়ম অনুযায়ী এটা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব আমাদের ভাতা মন্ত্রণালয় থেকে পাশ করিয়ে এনে আমাদের দেওয়া। কিন্তু ভিসি স্যারের কাছে গেলে উনি আমাদের বলেন, ‘তোমরা আর কখনো এই ব্যাপারে আমার কাছে আসবে না, তোমরা মন্ত্রণালয়ে যাও, ওখান থেকে টাকা দিয়ে দেবে’।
প্রসঙ্গত, ৫০ হাজার টাকা ভাতা ছাড়াও চিকিৎসকদের অন্য দুটি দাবি হলো- মাসিক ভাতা নিয়মিত দেওয়া ও ট্রেইনি চিকিৎসকদের বকেয়া ভাতা দ্রুত সময়ে পরিশোধ করা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকাল ১০টায় তিন দফা দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে প্রাইভেট পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন।